Archive for the ‘LOST IN TRANSLATION’ Category
আমার দুই রংবাজ মাস্টারমশাই
Posted by Dev Baul - 16/01/24 at 12:01 am
আমি রাইসিনা স্কুলে ভর্তি হই সাইন্স নিয়ে ক্লাস নাইনে আর আমরা ছিলাম এগার বছরের উচ্চ মাধ্যামিকের শেষ ব্যাচ| সেই কারণে আমি এক সীমিত সংখ্যক মাস্টারমশাই আর দিদিমণিদের সংস্পর্শে আসার সুযোগ পাই| আজ তিন কুড়ি এক গণ্ডা বছর বয়সে এসে, কোন এক অজানা কারণে তাঁদের প্রণাম জানাতে ইচ্ছে করল| প্রণাম জানাই শম্ভু স্যার, এনবি স্যার, নারায়ণ স্যার, শ্যামল স্যার, রুচিরা দিদিমণি, রসময় স্যার, প্রভাত স্যার, সান্যাল স্যার, রবিন স্যার, মধুসূদন স্যার আর রাইসিনার সমস্ত স্যার আর দিদিমণিদের| রবিন স্যার আর শ্যামল স্যার আমাকে একটু বেশীই স্নেহ করতেন — আজ তাঁদের কথা ভীষণ বলতে ইচ্ছে করছে|
রবিন স্যার
শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা নির্বিশেষে রবিন স্যার ক্লাসে ঢুকতেন, পরনে ধুতি, শার্ট, বোতাম খোলা গলাবন্ধ কোট, বাঁ হাতে আধ পোড়া চুরুট আর ডান হাতে চকের বাক্স নিয়ে| একটা পিরিয়ড যার জন্য আমরা সবাই — রোল নম্বর ১ থেকে ৪০ — অপেক্ষা করে থাকতাম|চল্লিশ মিনিটের ক্লাসে স্যার প্রথম কুড়ি মিনিট পড়াতেন আমাদের সিলেবাসের পাঠ্য “A Tale of Two Cities”| দ্বিতীয় কুড়ি মিনিট স্যার শোনাতেন বিশ্বসাহিত্যের থেকে বাছাই করা কিছু গল্প|এই বাছাইয়ের পরিসর ছিল বিস্তৃত — Shakespeare, Edgar Allan Poe, Daphne Du Maurier, Arthur Conan Doyle আর অনেক লেখক যাদের নাম আজ ভুলে গেছি| অনেক গল্পই এক পিরিয়ডে শেষ হত না আর আমরা আরব্য রজনীর শাহরাজাদ/দুনিয়াজাদ এর মত হা-পিত্যেশ করে বসে থাকতাম পরের পিরিয়ডের জন্য|
এবার আসি স্যারের খাতা দেখার গল্পে| আমার প্রথম ক্লাস টেস্টে স্যার কমেন্ট দিলেন “Yours is a fair attempt”| দ্বিতীয় টেস্টে কমেন্ট পেলাম “There is a scope for improvement”| ঘটনাচক্রে দুবারই আমি পেয়ছিলাম ২৬/৪০| স্যারের প্রশংসা আর তিরস্কার এর মধ্যে ছিল এক অতি সূক্ষ্ম রেখা| এই ছিল তাঁর পরিমিতি বোধ, তাঁর রংবাজি — এই ছিলেন আমাদের রবিন স্যার|
শ্যামল স্যার
শ্যামল স্যার ক্লাসে ঢুকতেন এক হাতে বেত আর এক হাতে ডাস্টার নিয়ে| বেতটার নাম দিয়েছিলেন ট্যাঞ্জেন্ট গ্রাফ — Trigonometry একটু-আধটু মনে থাকলে বেতের আকারটা কল্পনা করে নেওয়া যায়| এই বেত অবশ্য কারও পিঠে পড়তে দেখিনি| বেতটা ব্যবহার হতো অনেকটা বিচারকের হাতুড়ির মতো, ক্লাসের শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য| ক্লাসে এসেই বোর্ডে সেদিনকার পাঠ্য অঙ্কগুলো লিখে ফেলতেন| হাতের লেখা ছিল মুক্তোর মতো আর ওঁর মতো ফ্রীহ্যান্ড সার্কেল আঁকতে আমি অন্য কাউকে দেখিনি|
জানুয়ারি ১৯৭৭, সিলেবাস শেষ হয়ে গেছে, রিভিশান চলছে| স্যার দশ বছরের প্রশ্নপত্র করাতে গিয়ে বললেন, “১৯৭৫ এর এই অঙ্কটা তোমরা করতে পারবে না, কারণ Apollonius Theorem তোমাদের সিলেবাসে নেই”| ঘটনাক্রমে আমি অঙ্কটা আগে দেখেছিলাম, উঠে দাঁড়িয়ে বললাম, “স্যার, অঙ্কটা Pythagoras দিয়েও করা যাবে”| “বটে, বোর্ডে এসে সল্ভ করো”, বলে আমার দিকে চকটা এগিয়ে দিলেন| তখন আমার ধরণী-দ্বিধা-হও অবস্থা — কেন যে মুখ খুললাম! তাও, কোন ক্রমে ব্ল্যাকবোর্ডে গিয়ে অঙ্কটা এঁকে বললাম, “পয়েন্ট P থেকে লাইন AB তে একটা পারপেন্ডিকুলার আঁকতে হবে”| এটুকুর পরেই স্যার বললেন, “বুঝেছি, বস”| তারপর অঙ্কটা নিজস্ব ভঙ্গিতে Pythagoras দিয়ে করে বললেন, “ঠিকই তো, অঙ্কটা Pythagoras দিয়েও করা যায়”| ক্লাস শেষে আমাকে বলে গেলেন, “দুর্বল, তোমার হবে”(দেবপ্রতাপ না বলে, স্যার আমাকে দুর্বল নামেই ডাকতেন)| জীবনে অনেক আশীর্বাদ পেয়েছি, কিন্তু শ্যামল স্যার এর আশীর্বাদ এখনও মনে গেঁথে আছে|
ভালো থাকবেন স্যারেরা ও দিদিমণিরা| প্রণাম নেবেন|
If you enjoyed this article please consider staying updated via RSS. Links to your own social media pages could be added here.
- Posted in LOST IN TRANSLATION
- 9 Comments
রায়বংশীয় বায়সকাহিনী
Posted by Dev Baul - 05/01/24 at 05:01 pm
সত্যজিৎ বংশগতিতে অনেক কিছুর সাথে এক সূক্ষ্ম রসবোধ পেয়েছিলেন তাঁর বাবা আর ঠাকুরদার থেকে| এই রসে আছে চার আনা হাস্য রস, চার আনা অদ্ভুত রস আর আট আনা খেয়াল রস — তৃতীয়টি নবরসের বহির্ভূত আর নিতান্তই সুকুমারের পেটেন্টেড রস| সত্যজিৎ আবার নিজের সৃষ্টিকর্মে উপেন্দ্রকিশোর আর সুকুমার এর লেখা যথেচ্ছ ব্যবহার করেছেন — “গুপী গাইন বাঘা বাইন” উপেন্দ্রকিশোরের গল্প অবলম্বনে আর সুকুমারের “আবোল তাবোল”/“খাই খাই” এর ছড়া থেকে উদ্ধৃতি, আমরা সত্যজিতের লেখা বা সিনেমাতে হামেশাই পাই|
কিন্তু আমরা যদি একটি চরিত্র খুঁজি যিনি এই তিন লেখকেরই লেখার মধ্যেই বিদ্যমান — কাক ছাড়া বোধহয় অন্য কোন উদাহরণ পাব না| অনেক পক্ষী বিশারদদের মতে, পক্ষীকুলে কাক সবচেয়ে বুদ্ধিমান পাখি — একটি গবেষণায় পাওয়া গেছে যে কাকের বুদ্ধি নাকি এক সাত বছরের মানবশিশুর সমান| এবার আমরা একটু দেখি যে রায়বংশের তিন পুরুষের লেখায় কাক মহাশয় কী রূপে এসেছেন|
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
গেরস্ত ভাই, দাও তো আগুন,
গড়বে কাস্তে, কাটব ঘাস,
খাবে গাই, দেবে দুধ, খাবে কুত্তা,
হবে তাজা, মারবে মোষ, লব শিং,
খুঁড়ব মাটি, গড়বে ঘটি,
তুলব জল, ধোব ঠোঁট-
তবে খাব চড়াইর বুক।
তখন গৃহস্থ এক হাঁড়ি আগুন এনে বললে, ‘কিসে করে নিবি?’
বোকা কাক তার পাখা ছড়িয়ে বললে, ‘এই আমার পাখার উপরে ঢেলে দাও।’
গৃহস্থ সেই হাঁড়িসুদ্ধ আগুন কাকের পাখার উপর ঢেলে দিলে, আর সে বেটা তখুনি পুড়ে মরে গেল। তার আর চড়াইর বুক খাওয়া হল না।
“টুনটুনির বই” এর “চড়াই ও কাক” গল্পের শেষ কটি লাইন থেকে আমরা উপেন্দ্রকিশোরের কাকের বিদ্যেবুদ্ধির বহর বুঝতে পারি| ইনি নেহাতই নির্বোধ সাংসারিক জ্ঞানহীন এক প্রাণী — তাঁকে বোকা বানাতে মানুষ (কুমোর,কামার), জন্তু(গোরু, কুকুর, মোষ, চড়াই) আর এমন কি নিষ্প্রাণ মাঠ/পুকুর এরও অসুবিধা হয় না| এই গল্পে কাক মহাশয় এক দুষ্টু লোক বা ভিলেন|
সুকুমার রায়
উপেন্দ্রকিশোরের কাকের ঠিক ১৮০ডিগ্রী বিপ্রতীপে আমরা পাই সুকুমারের কাককে| সুকুমারের শ্রীকাক্কেশ্বর কুচকুচে একজন প্রতিষ্ঠিত হিসাবরক্ষক যিনি হিসাবি/বেহিসাবি, খুচরা/পাইকারি সকল প্রকার ব্যবসার গণনা করে থাকেন| তিনি হ্যান্ডবিল বিলি করে তাঁর প্রদত্ত পরিষেবার বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকেন আর তিনি সময়ের দাম বিলক্ষণ জানেন — ঠিক সময় মত সাত দুগুণে চোদ্দো স্লেটে লিখে ফেলেন, নাহলে সেটা “চোদ্দো টাকা এক আনা নয় পাই” হয়ে যেত| তিনি তাঁর মক্কেলদের বিকল্প বাছার অধিকার দেন — তাঁরা হিসাবটা ত্রৈরাশিকে না ভগ্নাংশে নেবেন| এমন প্রগাঢ় পাণ্ডিত্য কোন অমানুষ গোত্রের প্রাণীর মধ্যে আমরা বিশ্বসাহিত্যে আর পাব বলে মনে হয়না — অন্তত কর্ভাস এর আবির্ভাবের পূর্বে| “হ য ব র ল” তে শ্রীকাক্কেশ্বর কুচকুচে এক অন্যতম মুখ্য চরিত্র|
সত্যজিৎ রায়
এবার আসি প্রোফেসর শঙ্কুর সন্তানসম কর্ভাস এর গল্পে| উপেন্দ্রকিশোরের কাক থেকে শ্রীকাক্কেশ্বার কুচকুচে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন| কিন্তু কাক্কেশ্বর থেকে কর্ভাস এর পরিবর্তনকে একটা কালের নিয়ম মেনে বিবর্তন বলা যেতে পারে — যে নিয়মে উত্তরসূরির মেধা পূর্বপুরুষের চেয়ে বেশী হয়| কর্ভাস অবিশ্বাস্য ভাবে অনেক কিছু জানে এবং করে — সে নিজের নাম ইংরেজিতে লিখতে পারে, প্রাইম নাম্বার জানে ইত্যাদি| তার বাকি গুণের ফিরিস্তি দিতে গেলে কর্ভাস গল্পটার বহুলাংশ এখানে লিখে ফেলতে হবে| কর্ভাস এর জ্ঞান এর উৎস কিছুটা জীন আর অনেকটাই অরনিথন| অরনিথন হল প্রোফেসর শঙ্কু আবিষ্কৃত পাখি-পড়ানো যন্ত্র| অরনিথন যন্ত্রটি বৈদ্যুতিক তরঙ্গ দিয়ে পাখির মস্তিষ্কে জ্ঞান ও বুদ্ধি পাঠায়| কর্ভাস অবশ্য অরনিথনের ক্ষমতা কে ছাপিয়ে এক অদ্ভুত মানবসুলভ বুদ্ধি বা হিউম্যান ইন্টেলিজেন্স অর্জন করে, যেটার পাখির বুদ্ধির সাথে কোন সম্পর্ক নেই|
তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকতেই সে অক্লেশে গোঁত খাওয়া ঘুড়ির মতো গাছের মাথা থেকে নেমে এসে বসল আমাদের মারসেডিসের ছাদের উপর| তারপর অতি সন্তর্পণে — যেন জিনিসটার মূল্য সে ভালভাবেই জানে — তার ঠোঁট থেকে তার সামনেই নামিয়ে রাখল আর্গাসের মাইনাস বিশ পাওয়ারের সোনার চশমাটা|
বলা বাহুল্য এই গল্পে কাক আর অন্যতম না, সে এখন প্রধানতম মুখ্য চরিত্র|
উপসংহার
এই তিন লেখকের লেখায় কাকের উত্তরণের দুটো গল্প পাই ১)বোকা থেকে চালাক আর চালাক থেকে জিনিয়াস; ২)ভিলেন থেকে অন্যতম মুখ্য চরিত্র আর অন্যতম থেকে প্রধানতম মুখ্য চরিত্র| অন্যদিক থেকে দেখলে আমাদের সমাজের জ্ঞান যত বেড়েছে, আমাদের কাককে দেখার দৃষ্টিভঙ্গিটাও বদলেছে — হয়ত আশেপাশের জীবজগতটাকে আমরা আর একটু সহমর্মিতার সাথে দেখতে শিখেছি| যাই হোক, রায়বাবুরা তিন পুরুষ ধরে কাকের গপ্প বলে আমাদের আনন্দ দিয়েছেন — এটাই বাঙ্গালির পরম প্রাপ্তি|
If you enjoyed this article please consider staying updated via RSS. Links to your own social media pages could be added here.
- Tags: #satyajitray
- Posted in LOST IN TRANSLATION
- 8 Comments
Sunil Gangopadhyay—the Nonbeliever Poet
Posted by Dev Baul - 09/09/22 at 01:09 pm
Sunil Gangopadhyay wore many hats—poet, novelist, short-story writer, historian, and essayist. While all the hats sat easily on him, he had an avowed preference for the poet’s hat. He said, “This birth is only for poetry……I long to live long only for poetry” in his ode to poetry, Only for Poetry.
Trying to bracket Sunil’s poetry into genres would be a hugely futile exercise but his writings in his later years betrayed his repulsion for and exasperation with bigotry, fundamentalism, and indoctrination.
Sunil finds rationality and science are getting drowned in a sea of faddish beliefs and exhorts the nonbelievers to unite in the poem Sorbohara Abishwasi that roughly translates to Wretched Nonbelievers.It is a moot point whether he would have been able to write this today without hurting some sentiments or being branded anti-national.
Here is an English version of the poem’s last stanza, ineptly interpreted by me.
Wretched Nonbelievers
Sunil Gangopadhyay
Losing the battle as I age
Losing every day without a cease.
Don’t hurt the other man’s faith……
Don’t hurt the other man’s belief….
So many beliefs floating around
Numbers bloating each day.
So many types of beliefs…
The saffron-clad has ordained that
Street dogs shall lick the blood of the
Child of other faith, trickling on the road
It is his firm belief.
The faithful flag bearer believes that
the throats of girls should be slit
Who dare to sing;
They should don burqas
When they play tennis;
This is also his firm belief.
They with bomb-strapped torsos
Moving toward annihilation;
They with toothy smiles and rippling
muscles wishing to trod on the world;
They are the squad of believers
All are believers, all are faith sentries
And I wish to say in my
Weak and broken voice
“Wake up and unite
Ye wretched nonbelievers of the world
You got nothing to lose but your faith.”
Translated by Dev Baul
Here is the poem recited by Manishikha Baul—Odissi Dancer, Performing Artist and Social Activist
If you enjoyed this article please consider staying updated via RSS. Links to your own social media pages could be added here.
- Tags: sunilgangopadhyay
- Posted in LOST IN TRANSLATION, Uncategorized
- No Comments
সেপারের রবীন্দ্রনাথ
Posted by Dev Baul - 17/05/22 at 04:05 pm
সেপারের রবীন্দ্রনাথ
দেবপ্রতাপ বল
এক মার্কিন ইউনিভার্সিটির বাংলা ভাষার প্রফেসর (জন্মগত গোরা সাহেব) ঢাকায় এক বক্তৃতায় বলেছিলেন, “আপনারা সব সময় বলে থাকেন-এপার বাংলা, ওপার বাংলা। আচ্ছা, এই দুই বাংলার বাইরে যে বিপুলসংখ্যক বাংলাভাষী থাকেন তাদের আপনারা কোন বাংলার বলবেন? আমার প্রস্তাব – তাদের সেপার বাংলার লোক বলা হোক।”
আমি সেই সেপার বাংলার লোক, তাই এই শিবের গীত গাওয়ার প্রয়োজন হলো। ঘটনাক্রমে আমাদের পরিবার তিন পুরুষ ধরে সেপার বাংলায় বা প্রবাসে বাস করছে আর বংশানুক্রমে পরিবারের পুরুষেরা কেরানিগিরি করে এসেছেন। আমার বড় হয়ে ওঠা এই মধ্যবিত্ত পরিবেশে আর মূল্যবোধ নিয়ে। সংসারের নিয়মেই রবীন্দ্রনাথের সাথে পরিচয় হল – গীতবিতান, সঞ্চয়িতা, আর গল্পগুচ্ছ পড়ে আর শুনে।
এই রবীন্দ্রনাথের সাথে প্রথম পরিচয়ের গল্পটা নেহাতই সাদামাটা,আর পাঁচটা বঙ্গসন্তানের বেড়ে ওঠার গল্পের মত। তাঁর সাথে আমার দ্বিতীয় পরিচয় হয় পরিণত বয়সে আর সেটা হয় কিছু অবাংলাভাষীদের মাধ্যমে। এই গল্পটা কিছুটা আলাদা – কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনার বিবরণ।
প্রথম
আমার এক পরিচিত বিদেশি আমাকে একটা কবিরের লেখার ইংরেজি অনুবাদের খোঁজ করতে বলেছিলেন। বইয়ের দোকানে প্রথম যে বইটা হাতে এল, সেটার অনুবাদকের নাম শ্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর! কিছুটা খোঁজখবর নিয়ে জানলাম যে কবিরের লেখা প্রথম ইংরেজি অনুবাদ করেন রবীন্দ্রনাথ। অনুবাদের গুণাগুণ বা যথাযথতার বিচার আমার ক্ষমতার বাইরে কিন্তু রবীন্দ্রনাথ যে দুটো পরভাষা নিয়ে কাজ করেছেন, সেটাই আমার কাছে চরম বিস্ময়কর।
দ্বিতীয়
প্লেনে পুনে-ব্যাঙ্গালোর যাত্রাপথে এক মারাঠি সহযাত্রীর কাছ থেকে রবীন্দ্রনাথের এক নতুন পরিচয় পেলাম। বাঙালি দেখে ভদ্রলোক নিজেই যেচে আলাপ করলেন – একথা সেকথা হতে হতে টেগোর এ এসে ঠেকল। তার পরের এক ঘন্টা ধরে আমি জানলাম যে সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রথম ভারতীয় ICS অফিসার বম্বে প্রেসিডেন্সি তে অনেকদিন কালেক্টার হিসেবে ছিলেন। সেই সময় রবীন্দ্রনাথ তাঁর দাদা সত্যেন্দ্রনাথের বাড়িতে বেশ কিছুদিন ছিলেন। সেখানে থাকাকালীন তিনি সন্ত তুকারাম রচিত অভঙ্গ (ভজন) শোনেন এবং ভালোবেসে ফেলেন। সেই ভালবাসা এতটাই গভীর হয় যে, তিনি তুকারাম এর লেখা বারোটি অভঙ্গ বাংলায় অনুবাদ করেন। আবারও অনুবাদ আর এবার মারাঠি ভাষা – আর ও একটি পরভাষা।
তৃতীয়
একবার এক নব্য রবীন্দ্রবিরোধী সর্বজ্ঞর সাথে রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়ার ভুল করে ফেলেছিলাম। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী “পুরানো সেই দিনের কথা” নাকি “Auld Lang Syne” থেকে চুরি করা(plagiarized)। কিছুক্ষন এক অর্থহীন বিস্বাদ বিতর্কে সময় কাটিয়ে গুগল নিয়ে বসলাম। জানলাম “Auld Lang Syne” এর আদলে বিশ্বের ষাটটি ভাষায় গানটি লেখা এবং গাওয়া হয়েছে। আমার মত গড়পড়তা বঙ্গসন্তান যার এই স্কটিশ মেলোডিস এর সাথে পরিচয় নেই, এই সম্পদ থেকে বঞ্চিত থাকত, যদি রবীন্দ্রনাথ এই গানটি না লিখতেন।
তারপর যত রবীন্দ্রনাথের সাথে পরিচয় বেড়েছে, তত বেশি করে তাঁর সৃষ্টিতে সেপারের প্রভাবটা চোখে পড়েছে। এই “সেপার” এর ব্যঞ্জনা কিন্তু উপরোক্ত “সেপার বাংলা” র ব্যঞ্জনার থেকে কিছুটা ভিন্ন — এখানে “সেপার” হল বাংলার বহির্বিশ্ব। রবীন্দ্রনাথ বড় হয়েছেন এপার/ওপার বাংলায়, কিন্তু নিজের সৃষ্টিকে কোন বেড়াজালে বেঁধে রাখেননি—বরং সব আগল খুলে দিয়ে নিজের সৃষ্টিতে সেপারের বাতাস, জল, ও সুগন্ধ বইতে দিয়েছেন। বোধ করি তাই তিনি বাংলার কবি থেকে বিশ্বকবি হয়েছেন আর লিখে গেছেন,
আপন হতে বাহির হয়ে বাইরে দাঁড়া,
বুকের মাঝে বিশ্বলোকের পাবি সাড়া॥
If you enjoyed this article please consider staying updated via RSS. Links to your own social media pages could be added here.
- Posted in LOST IN TRANSLATION
- 25 Comments
In Search of a Spine
Posted by Dev Baul - 25/06/21 at 12:06 am
In Search of a Spine
All obituaries and tributes for poet Shankha Ghosh who succumbed to post-corona complications last April, have been full of hyperboles like “conscience of Bengal”, “prophet of humanity”, and so on. It is enormously ironic that the legacy of a poet known for his subtleties, sarcastic innuendoes and understatement, has to be celebrated with such overstatements and embellishments.
Such exaggerations paint an off-putting halo around the poet and take him away from the readers, especially those who have not read Shankha Ghosh in Bengali. Shankha Ghosh’s mastery over his craft, his relentless inquisition against the establishment—all get lost in this din.
Here I present an English and a Hindi version of his poem “The Crawl.” This epigrammatic poem, to my mind, is most representative of his writing.
These are not authorized literal translations but rather personal interpretations of the poet’s verse. Hindi version is by Mrs. Sipra Choudhury, an ex-professor of Bengali at the University of Delhi.
Hopefully, this will incite some readers to read more of Shankha Ghosh’s poetry in Bengali or more authentic translations.
The Crawl
Shankha Ghosh
(I) Wake up suddenly.
A storm brewing outside?
The window panes are pounding,
Lightning strikes fleetingly.
As I go to bed again, in the flash of that lightning,
it seems someone is crawling in the room.
-‘Who’s there? Who? ‘
The crawler makes no sound.
Coming near him, I ask again:
-‘Who are you? What do you want?’
Silently he keeps moving from corner to corner
Keeping the head low, avoiding eye contact.
– ‘Are you looking for something?’
I can hear:
– Sure ‘I’m looking for it, I must find it –
On finding it, will walk away on my own
-‘What are you looking for? ‘
He says in a soft voice:
– ‘My Spine’
At that moment the lightning flashes again.
I look up in shock:
He is not alone – many, many
crawlers are searching for the same
across all corners of the room…
(Translated from Bangla…………………………………. Dev Baul)
Recited by Manishikha Baul – Odissi Dancer, Performing Artist and Social Activist
रेंगना –
शंख घोष
अचानक नींद टूट गई।
बाहर क्या आँधि आ रही है?
खिड़की में ज़ोर ज़ोर से आवाज़ हो रही है।
बीच बीच में बिजली चमक रही है।
फ़िर लेटते वक्त बिजली की छटपटाते हुई रोशनी में
ऐसा लग जैसे कमरे में कोई घुटने के बल रेंग रहा है
“कौन है वहां पर? कौन?”
कोई आवाज़ नही आती
उठके आता हूँ, फ़िर से पूंछता हूँ,
“आप कौन है क्या चाहते है?”
वह फ़िर भी जवाब नही देता है।
यह कोणा वह कोणा घूमता रहता है।
“आप क्या कुछ ढूंढ रहे हैं”
सुनाइ दिया,
” ढूंढ तो रहा हूँ, ढूंढना तो पड़ेगा ही।
मिलने पर निकल जाऊंगा, खुद अपने पैरों से चलकर।”
“क्या ढूंढ रहे हैं”
धीमी आवाज़ में वो बोले,
“मेरा मेरुदण्ड”
तभी फ़िर से बिजली चमकी,
चौंक कर देखा,
अकेला वह ही नहीं, बहुत सारे लोग
उसी खोज में कमरे का कोणा-कोणा रेंग रहे है।
(बांगला कविता अनुवाद करने की अक्षम कोशिश……..शिप्रा चौधरी)
Recited by Sipra Choudhury
হামাগুড়ি
শঙ্খ ঘোষ
ঘুমটা ভেঙ্গে গেল হঠাৎ।
বাইরে কি ঝড় হচ্ছে?
দাপাদাপি করছে জানলার
পাল্লাদুটো,
মাঝে মাঝে বিজলি ঝলকাচ্ছে।
ফের শুয়ে পড়তে গিয়ে সেই
বিদ্যুতের ছটফটে আলোয় মনে
হল ঘরের মধ্যে যেন হামা
দিচ্ছে কেউ।
-‘কে ওখানে? কে?’
হামা কোনো শব্দই করে না।
উঠে আসি কাছে, আবারও
জিজ্ঞেস করিঃ
-‘কে আপনি? কী চান?’
সে তবু নিশ্চুপ থেকে এ –
কোণে ও -কোণে ঘুরছে
মাথা তুলছে না কিছুতেই, চোখে
চোখ নয়।
-‘কিছু কি খুঁজছেন আপনি?’
শুনতে পাচ্ছিঃ
-‘খুঁজছি ঠিকই, খুঁজতে তো হবেই –
পেলেই বেরিয়ে যাব, নিজে নিজে
হেঁটে।’
-‘কি খুঁজছেন?’
মিহি স্বরে বললেন তিনি :
-‘মেরুদণ্ডখানা।’
সেই মুহুর্তে বিদ্যুৎ ঝলকালো
ফের। চমকে উঠে দেখিঃ
একা নয়, বহু বহু জন
একই খোঁজে হামা দিচ্ছে এ-
কোণে ও কোণে ঘর জুড়ে।
Recited by Subhasri Roy – a Voice & Recitation Artist
If you enjoyed this article please consider staying updated via RSS. Links to your own social media pages could be added here.
- Posted in LOST IN TRANSLATION
- 11 Comments
A tale of two poet laureates
Posted by Dev Baul - 26/05/21 at 04:05 pm
A tale of two poet-laureates separated by centuries, continents, and languages
Bob Dylan was born in the USA in 1941, the same year in which Tagore died at the age of eighty. Their personas could not have been more different. There is no evidence to suggest that Dylan was familiar with Tagore or his works, although Dylan started as a folk artist and collaborated extensively with Purnadas—a pioneering Bengali folk artist. As is well known to Tagore buffs, he was very fond of folk music, and many of his songs had a folk origin.
I bring up this fantastic argument as a prologue to what I propose next that is even more outrageous. I submit parts of two songs to back my defense—Dylan’s Like a Rolling Stone and Tagore’s We ain’t got nothing, we sing from within and without. A lot has been lost in translation in my inept English interpretation of Tagore’s original.
Similar ethos predicates both the songs that celebrate the bliss of owning nothing. Both poet-laureates argue,” What can you lose when you got nothing?”
You may not be impressed with my construct, but do take a dekko and a listen.
|
If you enjoyed this article please consider staying updated via RSS. Links to your own social media pages could be added here.
- Posted in LOST IN TRANSLATION
- 6 Comments
Kompoo – a Professor Shonku story by Satyajit Ray
Posted by Dev Baul - 12/05/21 at 04:05 pm
For the uninitiated, Professor Shonku is a fictional scientist created by Satyajit Ray (1921–1992) in a series of Bengali science fiction books published from 1965 onward. Kompoo a story written in the early 70s is about a computer created by Shonku. When I read it again recently it read like a product catalog of an ‘OK Google’ or an ‘Amazon Alexa’ device – a very accurate prophecy made 40 years ago !!
Giving below an inept translation done by me of an extract from the story …..
Kompoo
When two Japanese assistants entered the stage with Kompoo, the auditorium reverberated with an appreciative buzz from the audience, as they saw the beautiful platinum-clad orb.
That a machine capable of answering 500 million questions would be 1.5 times the size of a football; that it would weigh only forty two kg; that it would not look like a machine – was beyond anybody’s imagination.
In this age of transistors and micro-miniaturization, even the most complex machine need not be big in size. Fifty years ago could anyone have thought that in future all the components of a radio could be fitted into a wristwatch!
At this point, it would be appropriate to note that our computer does not solve complicated mathematical problems. Its job is to answer those questions, answers to which are found in encyclopedias. Kompoo’s other special ability is that it answers verbally in a shrill humanoid voice. Before asking a question one would need to speak out the code ‘1313137’ to get Kompoo started <does this remind you of ’ok google’ or the ‘Alexa wake word’ >. After this one would get an instant answer to the asked question. The questions should be such that can be answered in brief and precise terms. Despite the forewarning, a journalist from the Philippines ended up asking Kompoo to comment on ancient Chinese civilization. Obviously, Kompoo kept silent, but when the same journalist asked specific questions regarding ancient Chinese dynasties like Tang, Ming, Han, Song – Kompoo reeled off the answers in a flash.
Apart from information dissemination, Kompoo also has a fine logical reasoning ability. A conversation between Nigerian naturalist Dr Solomon and Kompoo aptly demonstrates this trait.
Dr. Solomon – ‘Where would a baby baboon be safe
a) In front of a hungry deer or
b) In front of a hungry chimpanzee’
Kompoo – ‘hungry deer’
Dr. Solomon – ‘why?’
Kompoo –‘chimpanzees are occasional meat-eaters.’
Now, this is a recently acquired knowledge – till a few years ago it was believed that all primates were vegetarians. < Surely this interaction would pass the strictest Turing test !> [1]
———————————————————————————————————–
[1]The Turing test, developed by Alan Turing in 1950, is a test of a machine’s ability to exhibit intelligent behavior equivalent to, or indistinguishable from, that of a human.
Epilogue
I wrote this blog in 2020—Generative Pre-trained Transformer (GPT) was yet to be born. In 2023 I asked the same question of ChatGPT and Google’s Bard that Dr Solomon asked Kompoo.
Kompoo
Apart from information dissemination, Kompoo also has a fine logical reasoning ability. A conversation between Nigerian naturalist Dr Solomon and Kompoo aptly demonstrates this trait
Dr Solomon – ‘Where would a baby baboon be safe
- a) In front of a hungry deer or
- b) In front of a hungry chimpanzee’
Kompoo – ‘hungry deer’
Dr Solomon – ‘why?’
Kompoo –‘chimpanzees are occasional meat-eaters.’’
Now this is a recently acquired knowledge – till a few years ago it was believed that all primates were vegetarians.
ChatGPT
‘Where would a baby baboon be safe? a) In front of a hungry deer or b) In front of a hungry chimpanzee’
A baby baboon would be safer in front of a hungry chimpanzee than a hungry deer. Chimpanzees are closely related to baboons and share a similar ecological niche, potentially leading to a lesser threat due to a possible social bond or recognition. On the other hand, deer are herbivores and may see the baby baboon as a potential threat or competitor, reacting aggressively.
but chimpanzees are known to be occasional meat eaters!
You are correct, chimpanzees are indeed omnivorous and have been observed hunting and consuming meat, including small mammals like monkeys. I apologize for the oversight in my previous response. Both a hungry deer and a hungry chimpanzee pose potential threats to a baby baboon.
why deer? deer are herbivorous!
Apologies for the confusion caused in my previous response. A baby baboon would be safer in front of a hungry deer compared to a hungry chimpanzee. Deer are herbivores and typically do not pose a direct threat to baboons. In contrast, a hungry chimpanzee, being an omnivorous primate, could see the baby baboon as prey or competition for resources.
Bard
‘Where would a baby baboon be safe? a) In front of a hungry deer or b) In front of a hungry chimpanzee’
The baby baboon would be safer in front of a hungry deer. Deer are herbivores and do not eat meat. Chimpanzees are omnivores and will eat meat if they are hungry. While not all chimpanzees will attack a baby baboon, there is a greater risk of being attacked by a chimpanzee than a deer.
Here are some additional details about the diets of deer and chimpanzees:
- Deer: Deer are herbivores and their diet consists mainly of grasses, leaves, twigs, and fruits. They will also eat bark, nuts, and seeds. Deer do not eat meat.
- Chimpanzees: Chimpanzees are omnivores and their diet consists of both plants and animals. They will eat fruits, vegetables, nuts, seeds, and insects. Chimpanzees will also eat meat, including monkeys, birds, and small mammals.
In conclusion, the baby baboon would be safer in front of a hungry deer because deer are herbivores and do not eat meat. Chimpanzees are omnivores and will eat meat if they are hungry. While not all chimpanzees will attack a baby baboon, there is a greater risk of being attacked by a chimpanzee than a deer.
Notes
- Kompoo’s knowledge base is updated till 1970; ChatGPT’s till 2021; and Bard’s till 2023
- At first,ChatGPT gave a wrong answer—a hungry deer would be a bigger threat. On a follow-up prompt, it reversed its logic and gave an ambiguous answer that both a hungry deer and a hungry chimpanzee pose potential threats. On a further prompt, it accepted its mistake but came with an irrelevant answer that the baby baboon would be safe with its mother.
- On the other hand, Bard stated explicitly that the baby baboon would be safer in front of a hungry deer.
If you enjoyed this article please consider staying updated via RSS. Links to your own social media pages could be added here.
- Tags: AI, Alexa, Bard, ChatGPT, Ok Google, Professor Shonku, Satyajit Ray, Sci Fi
- Posted in LOST IN TRANSLATION
- 8 Comments